প্রতিনিধি কাশিয়ানী:- গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে দুর্গাপূজা মন্ডপে আনসার ভিডিপি নিয়োগে ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রশিক্ষক আজিম ইস শানের বিরুদ্ধে। তবে নিয়োগ দিতে না পেরে ঘুষের কিছু টাকা ফেরত দিয়ে দায় দিচ্ছেন উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা সম্পা পারভীনকে।
আনসার নিয়োগে ঘুস-বাণিজ্যের এ ঘটনা ফাঁস হওয়ায় উপজেলা জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুন্ন হচ্ছে এ বাহিনীর ভাবমূর্তি।
এ ব্যাপারে উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ভূক্তভোগী।
উপজেলার সিংগা গ্রামের সীমা সরকারের লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে আনসার ভিডিপির উপজেলা প্রশিক্ষক আজিম উস শান ৯৪ জন আনসার ভিডিপি সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে জনপ্রতি ৫’শ টাকা করে ৪৭ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন। তবে তাদের কেউকে দুর্গাপূজায় দায়িত্ব দিতে না পেরে উৎকোচের সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দিয়েছেন ওই প্রশিক্ষক।
একই অভিযোগ করেছেন ওই গ্রামের আশুতোষ মৌলিক। তিনি জানান, ৬টি গ্রুপে ৩৬ জন আনসার ভিডিপি সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে ৫শ’ টাকা করে ১৮ হাজার টাকা নিয়েছেন প্রশিক্ষক আজিম উস শান। দায়িত্ব দিতে না পারলেও উৎকোচ হিসেবে নেওয়া টাকা ফেরত দিচ্ছেন না প্রশিক্ষক আজিম উস শান।
উপজেলার ফুকরা গ্রামের ইকরাম হোসেন বলেন, ‘দুর্গাপূজায় দায়িত্ব পালনের জন্য আমি উপজেলা প্রশিক্ষক আজিম উস শান স্যারের সাথে যোগাযোগ করি। স্যার আমার ১০ জন লোককে দুর্গাপূজায় দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলে আমার কাছে ৩ হাজার টাকা দাবি করেন। দুর্গাপূজার আগে আমি স্যারের বিকাশে ৩ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেই। কিন্তু স্যার আমার কোনো লোককে পূজায় দায়িত্ব দিতে পারেননি। এছাড়া আমার ছেলে সৌরভকে আনসার ভিডিপির ‘মৌলিক প্রশিক্ষণ’ কোর্সে ভর্তির কথা বলে আমার কাছ থেকে ২৫০০ টাকা নিয়েছেন। এসব টাকা ফেরত চাইলে না দিয়ে নানা তালবাহানা করছেন তিনি।’
অভিযোগের বিষয়ে প্রশিক্ষক আজিম উস শানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে, তা আমার জানা নেই। পূজার সময় আমি চারদিন ছিলাম না। তবে সীমা সরকার লোক দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তার লোকগুলো ট্রেনিংপ্রাপ্ত না হওয়ায় নিতে পারিনি।
এ বিষয় কাশিয়ানী উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা সম্পা পারভিন বলেন, ‘দুর্গাপূজায় আনসার নিয়োগে ঘুষ-বাণিজ্যের কিছু লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। আমি বিষয়টি আমার জেলার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তদন্তপূর্বক তারা ব্যবস্থা নিবেন।’
আনসার ভিডিপির গোপালগঞ্জ জেলা কমান্ড্যান্ট মো. ফজলে রাব্বি বলেন, ‘আমি অনিয়মের কিছু লিখিত পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি বিভাগীয়ভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, প্রশিক্ষক আজিম উস শানের বিরুদ্ধে এর আগেও নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলায় কর্মরত থাকা অবস্থায় ইউপি নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের জন্য আনসার সদস্যদের কাছ থেকে ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ ও ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ভূক্তভোগীকে ফেরত দেয়ায় এবং অনিয়ম-দুর্নীতি করে বাহিনীর ভারমূর্তি ক্ষুন্ন করায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।